বন্দরে পড়ে থাকা বিভিন্ন মডেলের তিনটি জাপানি গাড়িসহ প্রায় ৭৫ লট পণ্য নিলামে তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমদানিকারকরা পণ্যগুলো খালাস না করায় আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর এই নিলাম অনুষ্ঠিত হবে । এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর ৯৩ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছিলো।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের তথ্যমতে, এবারের নিলামের জন্য অপেক্ষারত জাপানি গাড়ি ৩ টি যথাক্রমে টয়োটা মাইক্রোবাস, নিশান মাইক্রোবাস, টয়োটা কেআর-৪২ মডেলের। এছাড়াও রয়েছে ১৫২ কেজি সালফিউরিক এসিড, ১ ব্যাগ টেক্সটাইল কেমিক্যাল, ১৫ হাজার ৫০০ কেজি ড্রাগন ফল, ১ হাজার ৩১৩ রোল ফেব্রিক্স পণ্য, ৬২ কার্টন প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার, ২৪ লাখ ৬০৯ টাকা মূল্যের থান কাপড়, ২০ ব্যাগ জিংক অক্সাইড, ২ হাজার ৫৩০ কার্টন আউটডোর ওয়াল টাইলস, ৩১ হাজার ২০৫ টাকা মূল্যের রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস পণ্য, ১৯৫ কার্টন জেন্টস আন্ডারওয়্যার, ৭ কার্টন পেপার ট্যাগ, ১৩৩ কেজি প্লাস্টিক ফিতা, ২১ কার্টন ওয়েস্ট বেল্ট, ৫০ কেজি পেইন্টিং পণ্য, ৫৯ কার্টন ফ্লাড লাইট, ২২ পিস ল্যাবরেটরি সাপ্লাইজ, ৭৪ কার্টন হ্যান্ড গ্লোভস, ৫৭০ রোল ফ্লোর ম্যাট, ৭৬২ ব্যাগ এলুমিনিয়াম পাউডার, ৩ কার্টন কটন ড্রকর্ড, ৫৩ হাজার কেজি ওজনের এমপিইটি ফিল্ম, ৫১ কার্টন ইলেকট্রিক এয়ার পাম্প, ১৫ হাজার ৭০০ কেজি ওজনের ব্র্যান্ড ফেজার লিফট, ১৫০ কেজি ওজনের পুস্তক নিলামে তোলা হচ্ছে।
এ ছাড়াও ২ হাজার ৬৭০ পিস মোটরসাইকেল টায়ার, ৯৫ হাজার ৮৭৯ টাকা মূল্যের কসমেটিক্স, ৫ হাজার ৩৬৭ টাকার ডিপ লাইনার, ২ হাজার ২৪১ টাকার আই লাইনার, ১৩ লাখ ১২ হাজার ৩৪১ টাকার ক্যাপিটাল মেশিনারি, ৯৮ হাজার ৪২৫ টাকার মেশিনারি পণ্য, ১ লাখ ৯ হাজার ৩৬১ টাকার পিভিসি মেশিন, ১ ইউনিট ডায়নামিক ব্যালেন্সিং মেশিন, ৯১ পিস খালি ড্রাম, ২৭ হাজার ১৫০ কেজি ওয়্যার রোপ, ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৬ কেজি ওজনের চেইন ক্যাবল, ৩০ পিস ইলেকট্রিক স্ট্যান্ড ফ্যান, ৬ কোটি ১২ লাখ ৪২ হাজার টাকার বয়লার পণ্য, ৪ হাজার ৭৭৪ কেজি ওজনের শার্ট ফেব্রিক্স, ৬২ লাখ ৫৮ হাজার ৮৮৭ কেজি ওজনের উল ফেব্রিক্স, ১ হাজার ৪৩০ কেজি ওজনের আমব্রেলা ফেব্রিক্স, ১৮ পিস ওয়াল ফ্যান, ৫ লাখ ৭৭ হাজার ২০৯ টাকার ব্লক ও ব্লেড পণ্য, ৪৬ রোল কম্বল, ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ২৯২ টাকার জিংক শিট পণ্য উঠছে নিলামে।
সরকারি নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স কে এম করপোরেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মোরশেদ বলেন, বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে নিলামের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। নিলামে অংশ নিতে হলে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অফিস চলাকালীন ২০০ টাকা দরে ক্যাটালগ ও ১০০ টাকা দরে দরপত্র সংগ্রহ করতে হবে। আগামী ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার মধ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা (প্রশাসন) ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে টেন্ডার বক্সে দরপত্র জমা দিতে হবে।
কাস্টমস নিলাম শাখার ডেপুটি কমিশনার আল আমিন বলেন, করোনার কারণে ইতিপূর্বে নিলাম কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হলেও এখন থেকে নিয়মিত হবে। তিনি জানান, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ৯৩ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়েছিলো। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর নিলামে উঠছে ৭৫ লট। বিভিন্ন আমদানিকারকের মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্যের পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বন্দর থেকে খালাস না নেওয়ায় এসব পণ্য নিলামে তোলা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, আমদানিকৃত পণ্য বন্দরে আসার পর নিয়ম অনুযায়ী ৩০ দিনের মধ্যে খালাস না করলে বন্দর কর্তৃপক্ষ তা লিখিতভাবে কাস্টমসকে অবহিত করে। এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ আমদানিকারককে উক্ত পণ্য খালাসে ১৫দিন সময় দেয়। এ সময়ের মধ্যে আমদানিকারক খালাস না করলে তা নিলামে বিক্রি করার কথা কাস্টমস কর্তৃপক্ষের। এছাড়া বিভিন্ন সময় অবৈধভাবে কিংবা ঘোষণা বহির্ভূতভাবে আমদানিপণ্য জব্দ করে কাস্টমস। এসব পণ্যের একটি অংশ নিলামে বিক্রি হয়। কিন্তু আগে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট সময়ে নিলাম না হওয়ায় বিপুল পরিমাণ কন্টেইনার মাসের পর মাস ইয়ার্ডে জায়গা দখল করে থাকে।