ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ১৫৪ মামলার তদন্ত নয় মাসেও শেষ হয়নি।
এসব মামলায় এক লাখেরও বেশি আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ৩০০ জন আসামি। জামিনে মুক্তি পেয়েছেন পাঁচশর বেশি।
পুলিশ বলছে, তদন্ত প্রায় শেষের দিকে। অভিযোগপত্র দেওয়া হবে শিগগিরই। শুধু হেফাজত নয়, সহিংসতায় জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদেরও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ২৬ শে মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম। পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
শুধু রাজধানীতে নয়, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে দেশের আরও কয়েকটি জেলায়। সবচেয়ে বেশি তাণ্ডব চালানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। হামলা-ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ করা হয় সরকারি-বেসরকারি স্থাপনায়। সারা দেশে নিহত হয় ১৯ জন। পুলিশসহ আহত হয় পাঁচশ’র বেশি মানুষ।
ওই সময়ের ঘটনায় সারা দেশে মামলা হয় ১৫৪টি। সর্বোচ্চ ৫৬টি মামলা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। ঢাকায় ১৪, চট্টগ্রামে ১১, নারায়ণগঞ্জে ৮, মুন্সিগঞ্জে হয় দশটি মামলা। এসব মামলায় আসামি করা হয় এক লাখেরও বেশি। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক হাজার ৩০০ আসামি। যাদের মধ্যে জামিনে আছেন পাঁচশ’র বেশি।
নয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত একটি মামলারও অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফারুক হোসেন বলেন, অনেক আসামিকে আমরা গ্রেপ্তার করি। এ মামলাগুলোর তদন্ত প্রায় শেষের পথে। ঢাকা মহানগর পুলিশের টিম এই মামলাগুলোর তদন্ত করছে। তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে। অচিরেই এ মামলার তদন্ত শেষ করে আমরা কোর্টে চার্জশিট দাখিল করব।
তদন্তে সহিংসতার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতেরও জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলছে পুলিশ।
মো. ফারুক হোসেন আরও বলেন, হেফাজতের তাণ্ডব যে সময় চলে সেই সময় হেফাজতের নেতাকর্মীর হাতে আমরা তদন্তে অনেক সময় দেখেছি বা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার যে তথ্যগুলো আমাদের কাছে আছে সেই তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা দেখতে পেয়েছি যে শুধু হেফাজতের নেতাকর্মীগুলোই এ তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত থাকে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অন্যান্য যে সরকার বিরোধী দলগুলো আছে- তাদেরও অনেক নেতাকর্মী হেফাজতের নেতাকর্মীর সঙ্গে ছদ্মবেশে আন্দোলনগুলোর মধ্যে ঢোকে এবং তারা বিভিন্ন ধরনের তাণ্ডব চালায়। তদন্ত চলছে, যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হবে শুধু হেফাজতই না অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনও যখন জড়িত হয়েছিল তাদের বিরুদ্ধেও তদন্তে যেসব প্রমাণ আসতেছে, হেফাজতের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তাদের নামেও আমরা চার্জশিট দেব।