শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বলেছেন, ৭১-এর পরজাতি শক্তিরা আজও নানা ভাবে নানা চেহারায় দেশে-বিদিশে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে আউটার স্টেডিয়ামে চাঁদপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে ৩০তম মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ৭১ ও ৭৫ এর হত্যাকারীরা আজও বসে নেই। তারা ২০০৪ সালে ২১ আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বেকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য গ্রেনেড হামলা করেছিল। বেগম আইভি রহমানসহ ২৪ জনেক হত্যা করেছিল। তারাই ২০১৩-২০১৪ সালে অগ্নি সন্ত্রাস করে ২শ’র বেশি মানুষকে হত্যা করেছিল। অসংখ্য মানুষকে পুড়িয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, যখন আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে কাজ করেছি, তখনই দেশ এগিয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২১ বছর, আর বাকী ২৮ বছর স্বাধীনতা বিরোধী, স্বৈরাচারী, সামরিক ও আধাসামরিক সরকার দেশ পরিচালনা করেছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে মানুষ তাদের খাদ্যের অধিকার পেয়েছে।
‘মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎসহ এমন কোন ক্ষেত্র নেই যেখানে উন্নয়ন হয় নাই। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ বিস্ময়কর উন্নয়নের পথে এগিয়েছে। সারা বিশ্ব বিস্মিত হয়ে দেখছে কি করে বাংলাদেশ এত উন্নতি করছে। অথচ বাকী ২৮ বছর আমাদের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে।’
‘মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সব জায়গা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং অপমানিত করা হয়েছে। ওই সময় যুদ্ধাপরাধীদের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে রাজনৈতিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে, অর্থাৎ তাদেরকে সম্মানিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আর পিছিয়ে যেতে চাই না। সামনে এগিয়ে যেতে চাই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেভাবে দেশ এগিয়ে চলছে, আমরা চাই যে এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। সে জন্য আমাদেরকে সব অপশক্তির বিপরীতে রুখে দাঁড়াতে হবে। যারা নানা জায়গায় নানা ধরণের অপকর্ম করছে, তাদেরকেও রুখে দাঁড়াতে হবে। ’
দীপু মনি বলেন, ‘কেউ কেউ নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, আপনারা দেখেছেন বিপুল পরিমান মানুষ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে এবং ভোট দিয়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক পক্রিয়া চালু আছে। পৃথিবীর কোনো দেশেই গণতান্ত্রিক পক্রিয়া নিখুত নয়। চলতে চলতে যত ভুলত্রুটি থাকে তা ঠিক করে নিতে হয়। আমাদের যেসব সমস্যা আছে, সেগুলো দূর করতে করতে এগিয়ে যাব। আমাদের অতীতের সকল জঞ্জাল দূর করছেন শেখ হাসিনা। তিনি যুদ্ধাপরাধী ও বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার করছেন এবং দেশকে কলঙ্কমুক্ত করেছেন। দেশ এখন অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। ’
মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী।
সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযুদ্ধ বিজয় মেলার স্টেয়ারিং কমিটির সভাপতি যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম.এ.ওয়াদুদ। মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুদীপ্ত রায়, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা শাহনাজ।
৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। মেলায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণসহ ১১০টি স্টল স্থান পেয়েছে।