করোনার পরবর্তী সময়ে হঠাত করে কক্সবাজারের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। বেড়ে গেছে খুনের ঘটনা। বিশেষকরে রমজান মাস শুরু হওয়ার সাথে সাথে বেড়ে গেছে খুনের ঘটনা। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় দাড়িয়েছে মাত্র ১২ দিনে ৩ রোহিঙ্গাসহ ১৩ জন খুনের শিকার হয়েছে। খুনীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ছাত্ৰ-ব্যবসায়ী, যুবক কিংবা বৃদ্ধ। কয়েকদিন পর পর তাজা প্রাণগুলোকে হতে হচ্ছে হত্যাকারীদের হাতে বলী। এখানে চলছে রক্তের হলি খেলা। দিন-রাত এভাবে হত্যাকাণ্ডের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে সাধারণ মানুষ। এভাবে একের পর এক হত্যাকান্ডে প্রশাসনের কোন মাথাব্যথা নেই বলেও করছেন সচেতন মহল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঝড় তুলছেন নেটিজেনরা।
সচেতন মহলের অভিযোগ, জেলাব্যাপী কিশোর গ্যাং ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর দাপট বেড়ে যাওয়ায় হত্যাকান্ডের মতো মারাত্মক সব অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে।
মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে কক্সবাজারে ১৩ টি হত্যাকান্তের ঘটনা ঘটেছে। আর ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটেছে ৮টিরও বেশি। সর্বশেষ ৫ দিনে ৭ জন হত্যাকান্তের শিকার হয়েছে। এসব ঘটনায় বেশির ভাগ অভিযুক্তরা রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। সমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্পেও চলছে নিয়মিত হত্যাকান্ড।
সর্বশেষ গত মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প আমগাছ তলা এলাকায় ঔষুদ ব্যবসায়ী আবুল কালামকে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে নিহত হন, এর আগে গত সোমবার সকালে সদরের চৌফলদণ্ডী ব্রিজের নিচ থেকে সায়েম (২২) নামে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা, একই সময়ে কক্সবাজারের ঈদগাঁওতে সেহেরি খেয়ে নামাজের জন্য বের হয়ে দুবৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন তারেকুল ইসলাম (১৭) নামের আরেক যুবক। সে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের হেল্প পাড়া এলাকার মৃত ছগির আহমদের ছেলে।
৪ এপ্রিল সদর উপজেলার পিএমখালীতে ফুটবল খেলার প্রাইজমানির টাকার ভাগ বাটোয়ারা জের ধরে জাহাঙ্গীর (২২) নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে খুন করা হয়। সে পিএমখালী ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম জুমছড়ি এলাকার ছৈয়দুল হকের ছেলে। সোমবার বিকালে তাকে ছুরিকাঘাত করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে তার মৃত্যু হয়।
৭ এপ্রিল সদরের পিএমখালীতে পানি সেচ প্রকল্পের বিবাদকে কেন্দ্র করে মোরশেদ আলী ওরফে মোরশেদ বলী (৩৮) কে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। ইফতারের বাজার করার জন্য বাজারে বাজারে গেলে দূর্বরা লোহার রড, চুরি ও লাঠি নিয়ে মোরশেদের উপর হামলা করে।
এদিকে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় এমন অপ্রীতিকর ঘটনা বার বার ঘটছে বলে দাবী করেন এলাকার সচেতন মহল। সর্বশেষ আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিতিরা জানান, সভায় গৃহীত বিষয়গুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় আইন-শৃঙ্খলা কমিটি অনেকটা অকার্যকর হয়ে পড়েছে।