ইয়াঙ্গুনে মিয়ানমারের বৃহত্তম কারাগারে বিস্ফোরণ ও বন্দুকযুদ্ধে অন্তত আটজন নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। বুধবার ভোরে ইয়াঙ্গুনের কারাগারে বিস্ফোরণ ও বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
দেশটির স্থানীয় মিডিয়া মিয়ানমার নাউ এবং ইরাওয়াদি জানিয়েছে যে বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ইয়াঙ্গুনের ঔপনিবেশিক আমলের ইনসেইন কারাগারের পার্সেল কাউন্টারের কাছে দুটি বিস্ফোরণের পর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। তিন কারা কর্মকর্তা ও পাঁচ দর্শনার্থী নিহত হন।
বিস্ফোরণের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির বিষয়ে মন্তব্যের জন্য কারা কর্মকর্তারা এবং সামরিক সরকার তাৎক্ষণিকভাবে উপলব্ধ ছিল না।
একজন প্রত্যক্ষদর্শী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের সময় কারা সৈন্যরা গুলি চালায়। নিরাপত্তার কারণে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে আমি দৌড়ে বেরিয়ে আসি। এ সময় আমি আহত হই। কারাগারের প্রবেশ পথে নির্বিচারে গুলি চালায় সেনারা।
বিস্ফোরণস্থল থেকে সৈন্যরা প্রায় 10 ফুট (3 মিটার) দূরে অবস্থান করছিল, প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন। তিনি জানান, বিস্ফোরণে তিনি আহত হননি। বরং বুলেটের শেলে আহত হন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, পুলিশ বিস্ফোরণস্থল পরিদর্শন করছে। বিবিসি বার্মিজ বলছে, বিস্ফোরণে গুরুতর আহত কারা কর্মীদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাশের দোকানে সামান্য আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
দেশটির গণমাধ্যম জানায়, বিস্ফোরণের পর কারাগার সংলগ্ন আদালতে শুনানির জন্য নির্ধারিত কয়েকটি মামলার কার্যক্রম সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়েছে।
ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগার মিয়ানমারের সবচেয়ে কুখ্যাত হিসেবে পরিচিত। গত বছরের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে হাজার হাজার গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক কর্মী এই কারাগারে বন্দি রয়েছেন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তখন থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে ভিন্নমতাবলম্বীদের দমনে সেনাবাহিনী কঠোর অভিযান চালাচ্ছে।
অভিযানে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়। দেশের বিভিন্ন কারাগারে হাজার হাজার বিরোধী রাজনৈতিক কর্মী বন্দি রয়েছেন।
সূত্র: রয়টার্স, বিবিসি।