ছয় বছর পর ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ শনিবার সকাল ১১টায় ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস মাঠে এ সম্মেলন শুরু হয়।
সম্মেলনকে ঘিরে নগরজুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা সম্মেলনের মূল আকর্ষণ ১২০ ফুট দীর্ঘ ও ৮০ ফুট চওড়া সম্মেলন-মঞ্চের নির্মাণ কাজ শুক্রবার শেষ হয়েছে। মঞ্চ তৈরিতে কাজ করেন প্রায় অর্ধশতাধিক শ্রমিক। মানের উপকরণ ব্যবহার করা হয়, যা একসাথে প্রায় দুইশত অতিথি বসতে পারে।
মঞ্চের উপরে একটি বিশাল পান্না আঁকা। যেখানে ডান পাশে বঙ্গবন্ধু এবং বাম পাশে দলীয় নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্প উন্নয়ন কর্মসূচির অগ্রগতিও দেখা যাচ্ছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। উদ্বোধন করবেন দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে থাকবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক।
প্রধান বক্তা হিসেবে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এ ছাড়া দলের উপদেষ্টা ও সাবেক ধর্মমন্ত্রী বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, মির্জা আজম এমপি ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, সদস্য মারুফা আক্তার পপি ও রেমন্ড আরেং, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী মো. শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু, জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুসহ ময়মনসিংহের কেন্দ্রীয় নেতা-নেত্রীরা বক্তব্য রাখবেন।
এতে সভাপতিত্ব করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত।
সম্মেলন মাঠের আশপাশের গাছপালা ছাড়াও নগরীর প্রতিটি সড়ক ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে। এসব ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণে স্বাগত জানান দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। অনুসারীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে নেতাদের লেখা ‘দেখতে চাই’ লেখা পোস্টার-ফেস্টুন-পোস্টারও টাঙিয়েছেন।
সম্মেলনের মাধ্যমে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে কে আসছেন তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। তবে তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, অনুপ্রবেশকারীদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক নেতৃত্ব, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে সুসংগঠিত করতে সক্ষম নেতৃত্ব আসবে নতুন কমিটিতে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকা বলেন, যারা আগামী দিনে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে এবং শুধু ময়মনসিংহ নয় দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে এবং একই সঙ্গে দলকে আরও সুসংগঠিত রাখতে পারবে। এবং আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে শক্তিশালী এই সম্মেলনের মাধ্যমে এমন কমিটি প্রত্যাশা করছি। করছেন
মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, সম্মেলন সফল করতে দিনরাত কাজ করেছি। আমরা বিশ্বাস করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্যরাই নেতৃত্বে থাকবেন।
এদিকে সম্মেলনকে ঘিরে চার স্তরের নিরাপত্তায় ৫শ পুলিশ সদস্য থাকবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভূঁইয়া। পুলিশের সঙ্গে এপিবিএন সদস্যরাও থাকবেন বলে জানান তিনি। ইতিমধ্যেই পুলিশ সদর দফতর থেকে এপিবিএন সদস্যদের আনা হয়েছে। পুরো সম্মেলনস্থল সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। ওয়াচ টাওয়ার থাকবে।
সর্বশেষ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৬ সালের ৩০ এপ্রিল। পরবর্তীতে একই বছরের ১০ অক্টোবর অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকাকে সভাপতি এবং অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের। অন্যদিকে মহানগর কমিটিতে এহতেশামুল আলম সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মোহিত উর রহমান শান্তর নাম ঘোষণা করা হয়।