দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হাজী সেলিমের জামিন মঞ্জুর করেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে হাজী সেলিমকে ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অপর চার বিচারপতি হলেন, বিচারপতি মোঃ নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহানউদ্দিন ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ আহমেদ রেজা। দুদকের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
হাজী সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম সাঈদ আহমেদ রাজা সাংবাদিকদের জানান, আপিল নিষ্পত্তি হওয়া পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
উল্লেখ্য, সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর লালবাগ থানায় হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। এরপর এ মামলায় চার্জশিট দাখিল করে দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, হাজী সেলিম জ্ঞাত আয়ের বাইরে প্রায় ২৬ কোটি ৯২ লাখ ৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া সম্পদ ঘোষণায় প্রায় ১০ কোটি ৪ লাখ টাকার সম্পদ গোপনের অভিযোগ উঠেছে। হাজী সেলিম তার সম্পদ বিবরণীতে প্রায় ৫৯৩.৭ মিলিয়ন টাকার হিসাব বিবরণী দাখিল করেছিলেন।
ট্রায়াল কোর্ট 27 এপ্রিল, 2008 তারিখে তার রায় দেয়। পরিচিত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের জন্য তাকে 10 বছরের কারাদণ্ড এবং 10 লাখ টাকা জরিমানা, 1 বছরের জন্য অর্থ প্রদান করা হয়নি। সম্পদ গোপনের দায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড। উভয় বাক্য একই সাথে চলতে বলা হয়। হাজী সেলিমকে অবৈধ সম্পদ অর্জনে সহায়তা ও সহায়তার দায়ে তার স্ত্রী গুলশান আরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড, এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাজী সেলিম ও তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম হাইকোর্টে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। 2 জানুয়ারী, 2011 হাইকোর্ট 13 বছরের সাজা বাতিল করে।
হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে দুদক। আপিলের শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি হাইকোর্টের রায় বাতিল করা হয়। একই সঙ্গে হাজী সেলিমের আপিল হাইকোর্টে আবারও শুনানির নির্দেশ দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ওই নির্দেশনার আলোকে ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর হাজী সেলিমের আপিল দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন করে দুদক।
ওই আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১১ নভেম্বর মামলার বিচারিক আদালতের নথি তলব করেন। ৩১ জানুয়ারি আপিলের শুনানি শেষে গত বছরের ৯ মার্চ হাইকোর্ট রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করা হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি। হাইকোর্টের রায়ের কপি পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে হাজী সেলিমকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম মারা যাওয়ায় হাজী সেলিমের আপিল খারিজ হয়ে যায়। এ মামলায় হাজী সেলিম জামিনে ছিলেন।
হাজী সেলিম ২২ মে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠায়।